উৎস: রিলেশনের ৯০% ঝগড়ার উপাদান চার ধরণের, যা ৪ ‘ফ’ নামেও পরিচিতি:
১. ফ্রেন্ডস (মিউচুয়াল ফ্রেন্ডরা বেশি)
২. ফ্যামিলি (প্রধানতঃ কাজিনরা)
৩. ফোন
৪. ফেইসবুক
লক্ষ্য করলে দেখা যাবে অধিকাংশ ঝগড়ায় এগুলোর অন্ততঃ একটি বা একাধিকের অবদান থাকে। আবার চলমান ঝগড়ার 'নিয়ামক' বা 'প্রভাবক' হিসেবেও কাজ করে এগুলো।
মাধ্যম: ঝগড়ার মাধ্যমগুলো চিহ্নিত করতে গেলেও মোট ৩টি 'ফ' -পাওয়া যাবে:
১. ফোন
২. ফেইসবুক
৩. ফেইস-টু-ফেইস (সামনাসামনি)
ঝগড়ার শুরুটা: ঝগড়ার শুরুটা সাধারণতঃ কোন একটা কটুক্তি/খোঁচা মারা কথা বা অভিমান বা জেরাযুক্ত প্রশ্ন থেকে। আবার দীর্ঘ নীরবতা বা দীর্ঘশ্বাস থেকেও জন্ম নিতে পারে ঝগড়া। কাপলের মানসিকতা, রাগের পরিমাণ ও মূল বিষয়ের গুরুত্বভেদে ঝগড়াটা শুরু হতে পারে একবারে বা দফায় দফায়। কিছু লক্ষ্যনীয় বিষয়:
● কয়েক দফা ফোনালাপে ঝগড়ার শুরু হতে পারে। দু'জনেই নিজেদের পয়েন্টগুলো মুখের ওপর বলে দিতে চায়। দফায় দফায় লাইনও কাটা হয়।
● ঝগড়া শুরুর পরপরই অনেকে নিজের বা বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ডের ফ্রেন্ড (বিশেষতঃ মিউচুয়াল ফ্রেন্ডদের) বা কাজিন-টাজিনদের ঝগড়ার কথা জানায়। অনেকে আবার না জানালেও মন-টন খারাপ করে তাদের ফোন দেয়।
● অনেককে দেখা যায় নিজেদের কথা সরাসরি অপরজনকে না বলে ভায়া (বন্ধু/কাজিন প্রভৃতি) বলানোর। এতে করে সরাসরি তোপ থেকে মুক্তি মিললেও প্রায়ই কমিউনিকেশন গ্যাপের কারণে আরো বড় ঝগড়ার সৃষ্টি হয়।
● অনেক ঝগড়াই একদম এই প্রথম স্টেজেই মিলে যায়। এটার বেশ ক'টি কারণ আছে: 'পরস্পরের প্রতি টান' বা 'এই ঝগড়ার চাইতেও বড় কোন সমস্যা জীবনে আসা...' ইত্যাদি। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কারণটা ক্লান্তি, বিরক্তি, 'কি দরকার, ভালোই তো ছিলাম...' বা স্যাক্রিফাইজিং মনোভাব।
প্রকারভেদ:
১. "“তুমি এটা বললা কেন?" -ঝগড়া: রিলেশনের ঝগড়ার মোস্ট টিপিক্যাল ফর্ম এই ধরণের ঝগড়া। গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ডের বলা কোন কথা গায়ে বিপরীতজনের গায়ে লাগা থেকে এমন ঝগড়ার সূত্রপাত। তবে এ ধরণের ঝগড়া বেশিদিন টিকে না।
সূত্রপাত: ফেইস-টু-ফেইস, ফোন, ফেইসবুক
কমন ডায়লগ:
● "তাই বলে এভাবে বলবা?"
● "এটা দিয়ে কি mean করলা?"
● "ও... তোমাকে বললে তোমার মনে হয়... কিন্তু আমার কিছু মনে হতে পারবে না??"
● "আজব!!!"
২. "তুমি আর তোমার স্টুপিড ফ্রেন্ডরা..." - ঝগড়া: ফ্রেন্ডদের বলা কোন কথা বা কোন বেকুবী এ ধরণের ঝগড়ার জন্ম দেয়। তবে বাস্তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঝগড়ার উৎস বয়ফ্রেন্ডের বন্ধুরা। বন্ধুদের বেশি সময় দেয়া নিয়েও হতে পারে ঝগড়া।
কমন ডায়লগ:
● "থাকো তুমি তোমার ফ্রেন্ডদের নিয়ে!"
৩. ফেইসবুকে ঝগড়া: ওরে বাপরে! ভয়ংকর ধরণের ঝগড়া এটা। মানুষ যে ফেইসবুককে ২য় জীবন বানিয়ে ফেলেছে তারই প্রভাব এটা। এ ধরণের ঝগড়া অনেক কারণে লাগতে পারে:
● অপরিচিত/বাস্তবে পরিচিত কিন্তু অপছন্দ ব্যক্তির ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট (এবং/অথবা Accept করা)
● ছবি বা স্ট্যাটাসে উল্টোপাল্টা কমেন্ট
● লাগাতার কমেন্ট ও লাইক আদান-প্রদান
● চ্যাটে দেরি করে জবাব দেয়া
● ফেইসবুকে এক্সের পুনরাবর্তন ("আমাদের মধ্যে কিছু নাই, জাস্ট ফ্রেন্ড" - দাবি করে)
কমন ডায়লগ:
● "আমি বলছি তাই ব্লক করবা.... আর কোন কারণ তো দরকার নাই?"
● "তোমার ফ্রেন্ডদের নিয়েতো আমার কোন সমস্যা নাই...!!"
● "ফেইসবুকে কে আমার ফ্রেন্ড হবে না হবে সেটা কি তুমি ঠিক করবা?"
কমন প্রতিক্রিয়া:
● ফেইসবুক প্রোফাইল ডিঅ্যাক্টিভেট/ডিলেট।
● বিবাদমান ফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ডকে ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে রিম্যুভ।
● "আগামী কয়েক মাস ফেইসবুকে আসা হবে না...." টাইপের স্ট্যাটাস দিয়ে ৯ দিনের মাথায় কামব্যাক!

৪. "ওই মেয়ের সাথে তোমার এতো কি?" -ঝগড়া: বুঝতেই পারছেন এই ঝগড়ায় মূল ভূমিকা গার্লফ্রেন্ডের। বয়ফ্রেন্ডের অন্য কোন মেয়ের সাথ অন্তরঙ্গতা/হেসে হেসে কথা বলা/সঙ্গ দান থেকে এ ধরণের ঝগড়ার সূত্রপাত। অনেক সময় ছেলের উদ্দেশ্য সৎ থাকলেও ঝগড়া বেঁধেই যায়।
কমন ডায়লগ:
● "আমি বললে তো কখনো করো না..."
● "OK যাও! ঐ মেয়ের কাছে যাও... আমাকে তো আর তোমার দরকার নাই..." (কৃত্তিম অভিমানের সুরে)
● "আমাকে তো আর এখন তোমার ভালো লাগে না.... আমিতো পুরান হয়ে গেছি..." (ডায়লগটি অত্যন্ত ক্ষ্যত এবং বললেও সাধারণত কৃত্তিম অভিমানের সুরেই বলা হয়ে থাকে)
৫. ইগনোরেন্স/অবহেলা ঝগড়া: গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ডের প্রতি কোন অবহেলা বা Ignorance থেকে এ ঝগড়ার শুরুটা। স্বভাবগতভাবেই অ্যাটেনশন সিকিং হলেও মানুষ রিলেশনে এসে আরো বেশি মাত্রায় অ্যাটেনশন চায়। আর তার মধ্যে যদি কোন পক্ষের গাফিলতি হয়, তাহলে তো কোন কথাই নেই... মূহুর্তেই বেঁধে যায় তুমুল ঝগড়া। রিলেশনে ছেলেদের মধ্যে কেয়ারলেস ভাবটা বেশি দেখা যায়। আর তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ ধরণের ঝগড়ার রাগটা জমতে দেখা যায় গার্লফ্রেন্ডের মনে।
কমন ডায়লগ:
● "একবারো খোঁজ নিসো...বলো?"
● "আধাঘন্টা ধরে আমি দাঁড়ানো..."
● "এমনিতেই দেখা হয় সপ্তাহে একবার.... তারপর ডেটে এসেও মোবাইলটা টেপাই লাগবে?"
● "৪টা পর্যন্ত জেগে ছিলাম... তারপর আর পারি নাই।"
৬. সন্দেহভাজন ঝগড়া: অন্য কারো সাথে বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড্রের রিলেশন চলছে - এমন সন্দেহের থেকে বা নিশ্চিত হয়েই এ ধরণের ঝগড়া শুরু হয়। এ ধরণের ঝগড়াই সবচেয়ে বেশি ব্রেকআপে রূপ নিতে দেখা যায়। মজার ব্যাপার মেয়েরা যেভাবে ছেলেদের সরাসরি জিজ্ঞেস করে ফেলে তাদের সন্দেহের ব্যাপার। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছেলেরা সেটা করে না। উল্টো তাঁরা খোঁচায়। খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তথ্য বের করে করে মূল পয়েন্টে নিয়ে আসে।
কমন ডায়লগ:
● "১ ঘন্টা ধরে ওয়েটিংয়ে, কার সাথে এতো কথা?"
● "মেয়েটা কে?"
● "আগেতো এমন ছিলা না..."
● "তুমি গেসো কি না বলো? হ্যাঁ... বা... না!"
● " আমি যা বোঝার বুঝে গেসি..."
● "আর কিছু কি বলা বাকি আছে?"
৭. 'সময় দিতে না পারার' -ঝগড়া: ব্যস্ততার কারণে রিলেশনে প্রয়োজনীয় সঙ্গ বা সময় না দিতে পারা থেকে এমন ঝগড়ার সূত্রপাত।
কমন ডায়লগ:
● "কাজ আমার থাকে না? ব্যস্ত কি শুধু তুমি একাই থাকো?"
● "তুমি আমাকে ব্যস্ততার কথা শুনাচ্ছো?"
● "ফোন না হোক - একটা মিসকল বা ম্যাসেজতো তো অ্যাটলিস্ট দিতে পারতা..."
৮. সিলি ঝগড়া: নিজেদের খুবই ক্ষুদ্রাতি-ক্ষুদ্র বিষয় ধরাধরি নিয়ে এমন ঝগড়া হয়। ঝগড়ার টপিক যে কোন বিষয় হতে পারে, তবে খুব সহজেই এড়ানো যেতো এমনটাই সিলি হবে। যেমন:
● অমুক নায়িকা/মডেলকে Hot লাগে।
● ফোন কাটলা কেন?
● এইটা কি স্ট্যাটাস দিসো?
● "অমুক ফ্রেন্ডকে ডাকলা কেন?"
.....ইত্যাদি.....
৯. দূরত্ব: দূরত্ব রিলেশনের শান্তির বড় শত্রু এবং ঝগড়ার প্রভাবক।
● Long Distance রিলেশনশিপে দূরত্বটাই অধিকাংশ ঝগড়াকে টেনে এতোদূর নিয়ে যায়, হয়তো কাছাকাছি থাকলে একবার দেখা হলেই এটা আর কোন ব্যাপারই ছিলো না।
● দূরত্ব মনে সন্দেহ সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ: যে ছেলেটি ঢাকায় থেকে রাজশাহীর মেয়েটির সাথে রিলেশন চালিয়ে যাচ্ছে সে স্বভাবতই জানে না মেয়েটি কোথায় যাচ্ছে/কি করছে/কার সাথে দেখা করছে। সারাদিন হয়তো মাথার মধ্যে এ কথাগুলাই কাজ করে। আর তার ওপর ফোন এনগেজ পাওয়া আর ফেইসবুকে রোমান্টিক স্ট্যাটাস দেখে সন্দেহপ্রবণতা তো আছেই। সব মিলিয়ে একটা খুবই বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা হয়। আর সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হলো, এক্ষেত্রে চাইলেও রিলেশনের ঝগড়ার মহৌষধ: 'সামনা-সামনি দেখার' সুযোগটাও নেই।
● সামনা-সামনি দেখা হওয়াটা ঝগড়ার সবচেয়ে বড় ওষুধ। হয়তো পুরো ঝগড়াটাই হয়েছে ফোনে/ফেইসবুকে এবং দু'জনেই অথবা একজন তার যুক্তিবলে শক্ত অবস্থানে আছেন। কিন্তু শুধু একবার সামনে দেখা হলে দু'জনের কেউই হয়তো আর যুক্তির ধারও ধারবেন না। সামনা সামিনি দেখার পর ঝগড়া না মিটিয়ে যাওয়াটাই বরং বেশি শক্ত।
● রিলেশনের একটা পর্যায়ে গিয়ে (যাদের প্রথম রিলেশন) দু'জনেই 'দেখা করার' সাথে ঝগড়া মেটানোর সম্পর্কটি অনুধাবন করে, একে ওষুধ হিসেবে কাজে লাগানোর বুদ্ধিটা শিখে ফেলেন।
কমন ডায়লগ:
● "তোমার সাথে কথা আছে..."
● "কার সাথে দেখা করেছো? কাকে দেখে স্ট্যাটাস দিসো?"
● "তুমি কি আমাকে অবিশ্বাস করছো?"
● "দেখা করবো... কখন পারবা?"
● "আমার আর কিছু ভালো লাগছে না... প্রতিবার কি ঝগড়া মিটাতে আমাদের এভাবে দেখা করতে হবে? আমরা কি ঝগড়া না করে থাকতে পারি না? এই জন্য রিলেশন করেছিলাম?"
● "মনের ভেতর এতো কিছু ভেবে চিন্তে রাখি... তোমায় বলবো বলে। কিন্তু বিশ্বাস করো, তোমার কাছে আসলে সব ভুলে যাই। আর কিছু বলতে ইচ্ছে করে না... রাগটা ধরে রাখতে পারি না।"
● "প্রতিবার সেই একই গল্প। ঝগড়া হবে। দু'জনে কেঁদে-কেটে একাকার হবো। কিন্তু দেখা করার পরে আবার সব ঠিক... আমার আর ভালো লাগে না..."
১০. বয়স: কাপলের বয়স ঝগড়ার আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান:
● সমবয়সী/কাছাকাছি বয়সের কাপলের ঝগড়াগুলো অপেক্ষাকৃত কম ভায়োলেন্ট হয়। সেখানে তর্কের চাইতে যুক্তির খেলাই বেশি চলে। কথার মার-প্যাঁচও তাকে অনেক বেশি। Direct কথা খুব কম হয়, আর হলেও একদম ঝগড়ার শেষের দিকে গিয়ে হয়। এধরণের ঝগড়া চলেও বেশ ধীর গতিতে। কোন কোন ক্ষেত্রে মাস অব্দি গড়াতে পারে।
● কাপলের বয়সে মোটামুটি পার্থক্য থাকলে ঝগড়াগুলো তুলনামূলকভাবে এক্সট্রিম পর্যায়ের হবে। এ জগড়ায় প্রায় সব কথাই Direct হয়ে থাকে। নিজের অবস্থানটা জানিয়ে দেয়ার ইচ্ছেটা দু'জনের মধ্যেই প্রবলভাবে কাজ করে। এ ধরণের ঝগড়া বেশ তাড়াতাড়ি এগোয় এবং মিটেও যায় (বা বিপরীতটা) খুব তাড়াতাড়ি। ঝগড়ার একদম শেষে গিয়ে একজন আরেকজনকে ছেড়ে থাকতে পারবে না, এর বাদে আর খুব কম বৈধ Logic-ই এ ধরণের ঝগড়ায় খুঁজে পাওয়া যাবে।
● কথায় কথায় রিলেশন ভেঙে দেয়ার বিষয়টিও বেশি দেখা যায়। এমনটা সমবয়সীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় না, কারণ দু'জনেই জানে দু'জনের দৌড় কতোটুকু।
*উল্লেখ্য, এখানে সিরিয়াস রিলেশনশিপ নয় এমন রিলেশনে কাপলের 'কথায় কথায় ছেড়ে চলে যাওয়ার' বিষয়টি নিয়ে বলা হচ্ছে না। সেটা খুবই স্বাভাবিক।*
কমন ডায়লগ:
● "তাইলে যাও? তোমার তো সেটাই ইচ্ছা তাই না? রিলেশন রাখার দরকার কি?"
● "মনে রেখো, ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা তুমি বলছিলা... আমি বলি নাই..."
Bonus - একটি সাধারণ ঝগড়ার নমুনা ডায়লগ চক্র:
“ওকে, বাই... ভালো থেকো... তুমি অনেক ভালো কাউকে deserve করো। আমার মতো ফালতু ছেলে/মেয়েকে তোমার লাগবে না। শুধু মনে রেখো... কেউ একজন ভালোবেসেছিলো। ” (ফোন কাট)
(আবার রিং)
“চলে যাবা? না? ওকে যাও। সবতো এমনিতেই গেছে... তুমি আর থেকে কি করবা? আসলে আমার কপালেই ছিলো না।” (ফোন কাট)
(আবার রিং)
“যাবো না... আমি পারবো না...”
(নীরবতা)
“নাহ, আর থেকে কি হবে? সবতো বলেই দিসো...”
(নীরবতা)
“I'm Sorry... আমি তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারবো না (এখানে নাম হবে)।”
“পারবা... মুখে যখন আনতে পারসো তখন থাকতেও পারবা। আর তোমাকে ছাড়া আমার কিছু হবে না। চিন্তা করো না, আমি উল্টা-পাল্টা কিছু করবো না। একটু মন খারাপ হবে... হয়তো একটু কাঁদবো... হয়তো অনেক। হয়তো আর কোনদিন কাউকে বিশ্বাস করতে পারবো না... But it's OK... আমি ভাববো আমার কপালে ছিলো...”
“Please...”
(নীরবতা)
“Please... আমি আর পারছি না।”
(নীরবতা)
“ওকে ঠিক আছে... ফিরবা নাতো। ওকে! মনে রাইখো আর কোনদিন আমার ভয়েস শুনতে পারবা না। চাইলেও পারবা না। বাই!” (ফোন কাট)
(চক্র শেষ!)
১১. ক্যারিয়ার ও বিয়ে: ক্যারিয়ারের ঝগড়াটা রিলেশনের প্রো-লেভেলের ঝগড়া। ইনফ্যাক্ট এই ঝগড়ায় একটা ব্যাপার নিশ্চিত হয়েই যায় - বিয়েটা এখন শুধু সময়, সুযোগ আর ভাগ্যের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু ছেলের চাকরি, ক্যারিয়ার গোছানো ও শেষমেষ বিয়ের এ ঝগড়াটা রিলেশনের আর যে কোন ঝগড়ার চেয়ে বৈশিষ্ট্যে আলাদা -
● মেয়ে ছেলেকে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়। এ সময়রে মধ্যে তাকে চাকরী খুঁজে বের করে ক্যারিয়ার গোছাতে হয়।
● আবার সময় বেঁধে দেয়া গতে পারে বিয়ের ক্ষেত্রেও। বাসায় সম্বন্ধের কথা তোলা বা বিয়ের প্রস্তাব পাঠানোর (বা পালিয়ে বিয়ে) জন্য বেঁধে দেয়া হয় সময়। অনেকদিন ধরে রিলেশনের পর একটা ছেলে এ পর্যায়ে এসে টের পায় বিয়েটা আসলে সহজ নয়।
● রিলেশনের প্রথমে "পরে দেখা যাবে বলে" যে ব্যাপারগুলোকে সে ঠেলে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে তা এবার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কমন ডায়লগ:
● "আমি আর অপেক্ষা করতে পারবো না, ৪ মাস সময় আছে তোমার কাছে। এর মধ্যে কিছু করো, না হলে আমাকে ধরে বিয়ে দিয়ে দিবে। তখন কি করবা?"
● "বাসায় একটার পর একটা সম্বন্ধ আসছে। আর কতদিন ঠেকিয়ে রাখবো আমি?"
● "বাসায় বলো... বাকিটা আমি দেখবো। তুমি শক্ত থেকো।"
● "যখন হাত ধরেছিলা তখনতো সাহস কম ছিলো না, এখন হঠাৎ বিয়ের কথা ওঠাতে পিছপা কেন?"
● "আমার সমস্যাটাতো বোঝো..."
১২. সিরিয়াস ঝগড়া: সিরিয়াস ঝগড়ার রূপ নয়, বিষয়াদি সিরিয়াস। ঝগড়ার মূল আলোচনা এমন বিষয় নিয়ে হয় যেটা রিলেশনের একদম মূলস্তম্ভের সঙ্গে জড়িয়ে আছে (বিশ্বাস, ভালোবাসা, বিয়ে, তৃতীয় কেউ ইত্যাদি)। সিরিয়াস ঝগড়া না মিটলে রিলেশন ভেঙে যাওয়া প্রায় অবধারিত এবং এ ধরণের ঝগড়ায় ভাঙা রিলেশন ফের জোড়া লাগে কম যদি না মনোবল ও টানটা প্রবল হয়।
ঝগড়ার মাঝে: ঝগড়ার মাঝখানটা বৃষ্টি আসবে আসবে ভাব আকাশের মতো -
● এ সময়টায় অনেকেই ওয়েটিং গেইম খেলে। অন্যপক্ষ থেকে কিছু না বলা পর্যন্ত নিজেও কিছু বলে না।
● কেউ কেউ "তোমাকে ছাড়াও আমার দিব্যি চলে যাচ্ছে..." - ধরনের মানসিকতা দেখান।
● নিজের দোষ নেই জেনেও রাগে ও অভিমানে "আচ্ছা যাও সব দোষ আমার..." এমনটাও বলতে দেখা যায় কাউকে কাউকে।
● ঝগড়ায় গোঁ ধরে বসে থাকলেও অনেকেই কোন-না-কোন ভাবে চুপি চুপি প্রিয়জন কেমন আছে, কি করছেন এমনটা জেনে নিতে নিতে ভুলেন না।
● যুক্তিনির্ভর কাপলদের ঝগড়ার এ পর্যায়টা খুব দীর্ঘ হয়। অনেকই আবার অধৈর্য্য হয়ে যান, রাগটা আর ধরে রাখতে পারেন না। কারো কারো ঝগড়ায় মেটানোর মানসিকতা থাকলেও শুধু যুক্তিতে হেরে যাওয়ার ভয়ে আগ বাড়িয়ে ফোনটা আর দেন না। উল্টো কলটার অপেক্ষায় থাকেন।
ঝগড়ার শেষ: ঝগড়ার শেষটা খুব অদ্ভূত -
● পুরোটা ঝগড়ার সময় দু'জনের কেউই হয়তো নিজেদের কোন দোষ আছে বলে মানতে রাজি ছিলো না। অথচ ঝগড়া শেষ হবার পর এখন আর যেন নিজের দোষ খুঁজে পেতে সমস্যা হয় না।
● ঝগড়া শেষে অনেক কাপলই রিলেশনের নতুন অর্থ খুঁজে পান। একসাথে থেকে তারা কতোটা সুখী তার শোকর আদায় করেন।
● ঝগড়ার পর বেশ ক'দিন পর্যন্ত দু'জনের আচার-ব্যবহারেই একটা বেশ 'পজিটিভ অ্যাফেক্ট' থাকে (সারাক্ষণই ঝগড়ার উপরে থাকে এই টাইপ বাদে)। অনেক বেশি সহনশীল, হেসে হেসে বলা, "কোন ব্যাপারই না..." টাইপের আচরণ দেখা যায়। কিন্তু সমস্যা কিন্তু আবার ঠিকই হয়।
● সব ঝগড়ার শেষটা মধুর হয় না। রিলেশন শেষ হয়ে যায় বা হওয়ার অপেক্ষা থাকে।
কমন ডায়লগ:
● "ভুল আমারো ছিলো..."
● "আমরা দু'জনেই বাচ্চাদের মতো করেছি..."
● "তোমার সমস্যা হলো তুমি বলোনা... এরপর থেকে এমন কোন সমস্যা হলে আগে আমাকে বলবা..."
উল্লেখ্য: ঝগড়া মেটাতে ফ্রেন্ডদের কার্যকারিতা বেশি, এক্ষেত্রে সচরাচর কাজিনদের পারফরমেন্স খুবই খারাপ।
(এটা অত্যন্ত নির্লজ্জ একটি প্রচেষ্টা জ্ঞান জাহির করার। ইনফ্যাক্ট এই পোস্টের অবজারভেশন বাস্তবতা থেকে পুরোপুরি ভিন্ন হতে পারে। লেখক দাবি করেন না এই পোস্টে বলা সব কথা বাস্তবে একদম ঠিক ঠিক মিলে যাবে, তবে কারো কারো এবং কোন কোন ক্ষেত্রে মিললেও মিলতে পারে।)